Purchase!

এক মুঠো কর্পূর

যতটুকু জানি, প্রাচীন আরবে সুগন্ধী আতর হিসেবে ব্যবহৃত হতো কর্পূর। আজকে যা নিজ চোখে দেখি তা হলো আব্বা মরে গেলে কাফনাদির সঙ্গে কর্পূরও কেনা হয় পর্যাপ্ত। আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ) তার ‘আহকামে ইসলাম আকলকি নজর মে’ জানাচ্ছেন যে, ‘মৃত ব্যক্তি শরীরের সাতটি জায়গায় কর্পূর দেয়া হয়। কপাল, দুই হাটু, দুই পা এবং দুই হাত।’ ইসলামে এই সাত জায়গার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সেজদা দিতে গেলে কপাল, হাটু, পা এবং হাতের ব্যবহার অনিবার্য। সেজদার এই সাত জায়গায় কর্পূরের সুগন্ধ দিয়ে সেজদার অঙ্গগুলোকে যেমন গুরুত্ব দেয়া হলো তেমনি পুরো দেহটিকে সুরক্ষিত করা গেলো। উল্লেখ্য যে ঘ্রাণ দেয়া ছাড়াও কর্পূর কীটনাশক হিসেবে কাজ করে এবং যে কোন পচনকে রোধ করে। ফলে মৃত শরীরে কর্পূর ছড়িয়ে দিলে ক্ষতিকারক পোকামাকড় থেকে দেহটি রক্ষা পায় এবং পচনও ধীরগতির হয়। কিন্তু সাকিরা পারভীন তার ‘এক মুঠো কর্পূর’ কাব্যগ্রন্থে কি এসব বলতে চেয়েছেন?
By সাকিরা পারভীন
Category: কবিতা
Paperback
Ebook
Buy from other retailers
About এক মুঠো কর্পূর
যতটুকু জানি, প্রাচীন আরবে সুগন্ধী আতর হিসেবে ব্যবহৃত হতো কর্পূর। আজকে যা নিজ চোখে দেখি তা হলো আব্বা মরে গেলে কাফনাদির সঙ্গে কর্পূরও কেনা হয় পর্যাপ্ত। আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ) তার ‘আহকামে ইসলাম আকলকি নজর মে’ জানাচ্ছেন যে, ‘মৃত ব্যক্তি শরীরের সাতটি জায়গায় কর্পূর দেয়া হয়। কপাল, দুই হাটু, দুই পা এবং দুই হাত।’ ইসলামে এই সাত জায়গার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সেজদা দিতে গেলে কপাল, হাটু, পা এবং হাতের ব্যবহার অনিবার্য। সেজদার এই সাত জায়গায় কর্পূরের সুগন্ধ দিয়ে সেজদার অঙ্গগুলোকে যেমন গুরুত্ব দেয়া হলো তেমনি পুরো দেহটিকে সুরক্ষিত করা গেলো। উল্লেখ্য যে ঘ্রাণ দেয়া ছাড়াও কর্পূর কীটনাশক হিসেবে কাজ করে এবং যে কোন পচনকে রোধ করে। ফলে মৃত শরীরে কর্পূর ছড়িয়ে দিলে ক্ষতিকারক পোকামাকড় থেকে দেহটি রক্ষা পায় এবং পচনও ধীরগতির হয়। কিন্তু সাকিরা পারভীন তার ‘এক মুঠো কর্পূর’ কাব্যগ্রন্থে কি এসব বলতে চেয়েছেন?

আমরা ক্রিয়েটিভ ঢাকা থেকে সাকিরার একটি ছোট্ট বই (আকারে) করেছিলাম। ‘ছড়ানো ছিটানো মন’ নামের সেই কাব্যগ্রন্থখানি পাঠক মহলে আদৃত হয়েছে। সেই বইতে সাকিরা তার ছড়ানো ছিটানো মনকে ছড়িয়ে দিয়েছেন পাঠকের কাছে। আর সেই বইয়ের প্রকাশনা সাফল্যে আমরা তার কাঁছে চেয়েছিলাম আরেকটি আকারে ছোট্ট বই। এমন ছোট কবিতার বই পাঠকের পড়তে আরাম হয়, কিনতে আরাম হয়, বহন করতে আরাম হয়। কিন্তু এইবার সাকিরা আমাদের দিলেন ‘এক মুঠো কর্পূর’। এই কর্পূর দানা আমরা কোথায় ছড়াবো। কর্পূরের সুগন্ধি ও শোক আমাদের কতোদূর নিয়ে যাবে? এ তো পুরোটা আরাম নয়। সাকিরা যখন লেখেন, ‘খুলে দেখবার মতন কোনো লাশ অবশিষ্ট ছিল না আজ’, তখন এই মহামারী কাল পার হওয়ার ঘনিষ্ঠ স্মৃতি আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। কিন্তু মহামারী কেবল একটি ভাইরাসবাহিত রোগ তো নয়? হৃদয়েরও মহামারী আছে, নীতি, মূল্যবোধের মহামারীও আছে। সাকিরা কি এইসব মহামারীগ্রস্ত সভ্যতার শরীরেই কর্পূর দানা ছড়িয়ে দিতে চান। কিন্তু হায়-
ক্ষতির সীমানা জুড়ে ক্ষত
বৃষ্টি অবিরত
সীমানা জুড়ে যে ক্ষত আমাদের ঘিরে রাখে আর অবিরত বৃষ্টির বিধুর জীবন আর বেঁচে থাকে সেখানে কেবল কর্পূর সৌরভ কতোটা কার্যকর? সাকিরা বলে বসেন ধুম করে -
এক একদিন মনে হয়
অন্তরে হারপিক ঢেলে দিই
কিন্তু না, কর্পূর হৃদয় তো হারপিকে শান্তি পায় না, প্রশমণ পায়। তাই তার একটু পরে পরম বৈপরীত্যে নিয়ে সাকিরা লেখেন-
এই দেখ কত শান্ত আমি
আর সাদা আর কিরকম নীরব
তুমি আমায় কোনোদিন বুঝতে পারোনি
কর্পূর।
শেষ সৌরভ আর সঙ্গী কর্পূরও কি বুঝতে পারে না মানুষকে? সে বুঝতে না পারার অপরাধ তো কর্পূরের নয়। কর্পূর যথাবিহিত সাকিরা ছোট্ট ছোট্ট কবিতার প্রতীক। তীব্র সৌরভময়, মৃত্যুময় এবং কখনো প্রেমময় এবং প্রাণবন্ত। এমন অণুকবিতার নির্মাণে সাকিরা সুদক্ষ। কারণ তার কয়েকটা লাইনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে দৃশ্য, চিত্রনাট্য, গল্প এমনকি উপন্যাসের সম্ভাবনাও-
খাঁচায়
একটা গল্প পুষেছি
একদিন সে উপন্যাস হতে চাইল
শেষে কবিতা বানিয়ে
ঢুকিয়ে দিয়েছি
কফিনে।
কিন্তু ‘এক মুঠো কর্পূর’ কেবল কফিন আর মৃত্যুর গল্প নয়, আগেই বলেছি, দিনশেষে জীবন আর প্রেমই অনন্ত সৌরভ ছড়ায়। সাকিরার ভাষায়Ñ
দিনশেষে ঘরে ফেরার তাড়া
তিনশত পয়ষট্টি দিন
এর নাম ভালোবাসা
অতএব প্রিয় পাঠক, বিশ্বাস রাখুন সাকিরাতে। যে মোঁচড়, তীব্র বিষাদ, আঘাত সে চড়–ই আর নিমফুলের আহত হৃদয়ে বপন করে তারচেয়েও বড়, মহত্তর আদর ও প্রেম তার কবিতায় রয়ে যায় দিনশেষে।
জয় হোক সাকিরার
জয় হোক সাকিরার পাঠকের।

মুম রহমান
Creative Dhaka
  • Copyright © 2024
  • Privacy Policy Terms of Use